Ad Code

Responsive Advertisement

Ticker

6/recent/ticker-posts

চন্দ্রালি কর

 



দেবীপক্ষ


রেজিগনেশন মেইলের উত্তর দিয়ে ল্যাপটপ বন্ধ করে মেঘাদ্রিতা। জানলার বাইরে ফ্লাইওভার দৃশ্যমান। সুন্দরি নায়িকার সারি সারি পোস্টার দুপুরের বৃষ্টিতে যেন বারান্দার কোনায় ঝুলে থাকা ঘর মোছার ন্যাতা।   

ইস! পুজোর ঠিক মুখে আরেকজনের চাকরি গেল!    

-‘দেখো, এই কাজটা তোমার জন্য অ্যাপ্রপ্রিয়েট নয়। আমি টারমিনেট করছি না, রেজাইন করে দাও। ‘  

সদ্য কলেজ পাস ছেলেটি আর মেঘাদ্রিতার সাথে কথা বাড়ায়নি। ঘাড় নাড়িয়ে বিদায় নেয়।   

ঘড়ির কাঁটা সাতটা ছুঁই ছুঁই। এইচ আর ডিপার্টমেন্টে আজ সে একা। সুযোগ বুঝে বায়োমেট্রিক্সে আঙ্গুল রাখে। ঝাঁ চকচকে কর্পোরেট বিল্ডিং থেকে নেমে স্যাঁতস্যাতে কাদা ফুটপাথ। আচমকা তাপমাত্রার পরিবর্তন যেন বিরক্তি আরো বাড়িয়ে দেয়।  

আজ একটা ক্যাব বুক না করে উপায় নেই। মিনিবাসের বাদুড় ঝোলা আজ বরং থাক।    

মিনিট পনেরো অপেক্ষার পর ক্যাব এসে পৌঁছায়। ফোন চেক করে ওটিপি তারপর চালকের উদ্দেশ্যে, ‘এসি চালা দিজিয়ে ভাইয়া।‘ তারপর একটা ছোট টেক্সট – ‘বেরোলাম।‘ 

তৎক্ষণাৎ মায়ের উত্তর আসে, ‘আচ্ছা।‘    

ক্যাব দাঁড়ায় বালিগঞ্জ ক্যাম্পের সামনে। বাইরে টুপটাপ বৃষ্টি তার ওপর জ্যাম। জানলার বাইরে মসৃণ ভাবে গড়িয়ে পরা জলগুলো লাল নীল রঙ বদলাতে ব্যস্ত। সেই রঙ চিরে দুটো আঙুলের টোকা পড়ে জানলায়। বয়স খুব বেশি হলে আঠাশ; পরনে আধভেজা একটা পুরনো শাড়ী। কি কাপড়ের শাড়ী বলা মুশকিল। এরকম শাড়ীর কাপড়ের কোন রকমফের হয়না। শুধু শরীর ঢাকে। বাঁ কাঁখে একটি দুধের শিশু। ছোট হাতের মুঠোয় মায়ের শাড়ীর আঁচল শক্ত করে ধরা। ওইটুকুই তো পৃথিবী। ফস্কে গেলেই গেল। মেয়েটির আরেক হাতে এক গুচ্ছ নিওন সবুজ স্মাইলি বেলুন। 

মেঘাদ্রিতার অনায়াস হাত ব্যাগ থেকে কুড়ি টাকার একটা নোট বার করে জানলার কাঁচ নামিয়ে বাড়িয়ে দেয়।          

‘বেলুন লাগবে না। এটা নাও।‘

‘নেবে না?’ মেয়েটি ইতস্তত ভাবে হাসে।

মেঘাদ্রিতা মাথা নাড়িয়ে জানলার কাঁচ তোলে আবার। শিশুটি মায়ের কাঁধে মাথা রাখে। 

হোয়াটসঅ্যাপ  নোটিফিকেশনের টোনে মাথা নামায় মেঘাদ্রিতা। পরিচিত মানুষের মেসেজগুলো তাদেরই কণ্ঠস্বরে পড়া যায়।  

ক্যামেলিয়ার প্রশ্ন – ‘কোথায় তুই?’ 

রিপ্লাই টাইপ করার আগেই ফোন বেজে ওঠে। 

‘কিরে? এতবার কল করলাম, রিসিভ করলি না কেন?’ অভিযোগ ছুঁড়ে দেয় ক্যামেলিয়া। যদিও 

মেঘাদ্রিতার খামখেয়ালিপনার সাথে এতদিনে ওয়াকিবহাল সে। সেই কলেজের তৃতীয় দিনে পরিচয় তাদের। তারপর তিন বছর ছায়ার মত একসাথে। ক্লাসরুম পালটেছে। অধ্যাপিকারা পালটেছেন। রয়ে গেছে ক্যান্টিনের সামনে কাঠগোলাপ গাছটা, লাইব্রেরির বাঁকানো লোহার সিঁড়ি আর তাদের বন্ধুত্ব।  সব ভাল জিনিসের মত সেটার মেয়াদও ফুরিয়ে আসতে দেরি হয়নি যখন ক্যামেলিয়া বিএ শেষ করে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়।     

-‘তোর মনে হয়না ইটস টু আরলি! মাস্টার্সটা শেষ কর অ্যাটলিস্ট। আর চিনিসই বা কতদিন এই ছেলেটা কে?’ বলেছিল মেঘাদ্রিতা।

মেঘাদ্রিতার বাবা বলেছিল, ‘মেয়েটি বুদ্ধিমতী। জীবনে একধাপ এগিয়ে গেল।‘ 

বাবার কথার মানে না বুঝতে পেরে মেঘাদ্রিতা তিয়াসার শরণাপন্ন হয়। তিয়াসা কফিতে চুমুক দিয়ে বোঝায়, ‘আরে দেখিসনি ওই ফার্স্ট বেঞ্চের শরমীনা কেমন ক্লাসের নোটগুলো ক্যান্টিনে বসে মুখস্ত করে? কেন পড়ে? যাতে বাড়ি গিয়ে আর পড়তে না হয়। সেই সময়টা ও অন্য কাজে লাগাবে।‘  

তিন পাতার নোট্‌স আর জীবনে এক ধাপ এগিয়ে থাকার সমীকরণটা এখনও স্পষ্ট নয় মেঘাদ্রিতার।  

সে আর কথা বাড়ায়নি। মাস্টার্সের ফর্ম শুধু নিজের জন্য জমা দিয়েছিল।   

তারপর কেটে গেছে আরও তিন বছর। ক্যামেলিয়ার দাম্পত্যের ছবির সংখ্যা বেড়েছে ফেসবুকে। মেঘাদ্রিতার বেড়েছে প্রেমিকের সংখ্যা। যদিও ওর ফেসবুক টাইমলাইন অবধি কেউ পৌঁছাতে পারেনি।     

ক্যাব মোড় ঘুরে বালিগঞ্জ ফাঁড়িতে সবে পা দিয়েছে। ট্রাফিকের কোরাসে মেঘাদ্রিতা গলার আওয়াজ বাড়াতে বাধ্য হয়।   

‘আর বলিস না, ডিপার্টমেন্টের বাকি দুজন আজ একসাথে ডুব মেরেছে। সব কাজ একা সামলাতে হল। ইটস গেটিং অন মাই নার্ভস অ্যাট টাইমস! 

‘রেজিগনেশন কবে দিচ্ছিস?  কথা বলেছিস বাড়িতে?’  

‘না রে, আর কয়েকটা দিন যাক।‘  

কলেজে যেই মেঘাকে চিনতাম সে তো এত ভীতু ছিল না। আর যখন উই হ্যাভ দা লাক্সারি টু ডিসাইন আউয়ার লাইভস…’

ক্যামেলিয়াকে থামিয়ে মেঘাদ্রিতা ধমকায়, ‘তুই সেক্স অ্যান্ড দা সিটি থেকে এবার একটু বেরো, বুঝলি? জীবনটা অত সহজ নয়।‘   

‘এনিওয়ে, কাল দেখা কর না। ভীষণ ডিপ্রেসিং লাগছে বাড়িতে। এই ঘটনার পর যেন মা বাবা কেমন…’ 

‘ অর্ক যোগাযোগ করেছে আর এর মধ্যে?’

‘ না ভাই, ওর কোন কথা শোনার ইচ্ছে আমার নেই।‘ 

‘বেশ। কাল কোথায়? কখন?’

‘কাল বিকেলে। আইরিশ হাউস। আই লাইক দা ক্রাউড।  

ক্যাব থেকে নেমে পরিচিত গেট। অনান্য দিনের মতই জয়লাল কাকুর একঘেয়ে পান চিবানো হাসি। পরিবর্তনের যুগে এই একটা জিনিস অপরিবর্তনশীল। মাঝে মাঝে মনে হয় জয়লাল কাকু পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি মানুষদের মধ্যে একজন। রোগাসোগা এই মানুষটা রাজমিস্ত্রি ছিল মেঘাদ্রিতাদের ফ্ল্যাটের। কি কারণে ও এখনো এখানে থাকে মেঘাদ্রিতা মনে রাখার প্রয়োজন মনে করেনি। এক কথায় কেয়ারটেকার আর কি। তবে গ্যারেজের কোণায় জয়লাল কাকুর বেড়ার ঘর, মেঘাদ্রিতার কাছে কিছুটা দৃশ্যদূষণ বটে। 

লিফটের বোতাম টিপে হাসি বিনিময়ের পর চোখ যায় একটি বাচ্চার দিকে। বয়েস দশের কাছাকাছি।   

‘চিনতে পারলে একে? মালতির ছেলে। পুজোয় এবার নিয়ে এলাম। কে জানে পরের বছর এখানে আর থাকা হবে কিনা।‘ 

ছেলেটি দুই গালের সুস্পষ্ট টোল নিয়ে চোখ ছোট করে হাসে। 

‘ওকে তো আমি এইটুকু দেখেছিলাম! সেই জন্মানোর পর।‘ লিফটের দরজা বন্ধ হয়ে যায়।  


আজ ডিনার টেবিলে কথা তোলার সাহস করেই ফেলে মেঘাদ্রিতা।   

‘আমি ভাবছি কয়েকদিন ব্রেক নিয়ে লেখালিখিতে একটু মন দেবো।‘

‘আর এম বি এ? এইতো দুদিন আগে বললি!’ হতবাক দৃষ্টিতে তাকায় মেঘাদ্রিতার মা। 

‘ও কোনটাই করবে না। আমি বলছি শোন, এখনো সময় আছে একটা ছেলে দ্যাখো, নয়তো এরপর সেটাও…’ 

বাবার মুখ থেকে এই কথাটা প্রথম নয়। জলের গেলাসে ঠোঁট রাখে মেঘাদ্রিতা। 

 ‘কি যে পাস আমাকে প্রত্যেকবার ছোট করে!’ রাতে কাপড় ভাঁজ করতে করতে বলে মেঘাদ্রিতার মা।

‘এই বিষয়টাকে নাহয় তোমাদের লড়াইয়ের বাইরে রাখলে, মা। অন্তত একবার।‘ 

ঝাপসা চোখ চশমায় আড়াল করে সে।  

‘সাম্য জানে এম বি এ করছিস না?’

‘ওকে আলাদা করে তো জানানোর মত কিছু নেই।‘

‘না, তা নয়। বিদেশে পি এইচ ডি করছে, একটা রাস্তা দেখাতে পারত আর কি।‘

“Two roads diverged in a wood, and I-

             I took the one less traveled by…”

মেঘাদ্রিতার মা আটকায়।  

‘তোর বন্ধু অর্ণব ছেলেটা কিন্তু বেশ ভাল। আহা রে, এত বছর আমেরিকায় আছে। ঠিক মত খাওয়াদাওয়া হয়না। তুই মাঝে মাঝে একটু লুচি ভেজে খাওয়ালেই ও খুশি। ওর আর কোন দাবি নেই।    

মেঘাদ্রিতা মেজাজ হারায়। 

‘আহা, মা! ওর আবার কি দাবি থাকার কথা? আর লুচি ভাজার জন্য সুদুর আমেরিকা যাব কেন? বাড়িতেও তো ভাজতে পারি।

মেঘাদ্রিতা জানে না মায়েদের কিসের এত ভয়। সন্তান একা থাকলে ভয়, সন্তান কোন সম্পর্কে থাকলে ভয়। কাছে থাকলে ভয়, দূরে থাকলে ভয়।   

‘এই ভয়ের কোন থিওরি নেই, তুই মা হলে বুঝবি।‘ বলেছিল ওর মা। 


সাড়ে এগারোটা নাগাদ হোয়াটসঅ্যাপ কল আসে। মেঘাদ্রিতা উত্তর দেয়। 

‘এখনও জেগে? কটা বাজে ওখানে?’

‘তিনটের কাছাকাছি। এসাইনমেন্ট শেষ করতে হোল একটা।‘ ওপারে সাম্যর শান্ত কণ্ঠ। 

‘বাড়ি ফিরে আজ টেক্সট করলে না কেন?  কিছু এম বি এ কলেজের লিঙ্ক পাঠিয়েছিলাম, দেখলে?’ 

‘নাহ। মনটা ভাল লাগছে না। আজ আবার একজনকে টারমিনেট করতে হোল। প্রথম চাকরি তো মানুষ একটা স্বপ্ন নিয়ে শুরু করে। ছেলেটার চোখ দুটো…’ 

সাম্য ব্যাঙ্গ করে বলে - ‘এই, ডোন্ট টেল মি ইয়ু লাইক ইয়ঙ্গার গাইস নাউ!’  

‘শরীর! শরীর! তোমার মন নাই, কুসুম?’ 

‘মানে? এটা আবার কোথা থেকে এলো?’

‘পুতুল নাচের ইতিকথা। মানিক বন্দোপাধ্যায়।

‘আর পুতুল নাচ! নাচাচ্ছে তো আমার প্রফেসর। তুমি আজকাল একটা ভিডিও কলও করোনা। ইনটারেস্ট হারিয়ে ফেলছ, তাই না?’

‘একজন লেখক যার দিস্তা দিস্তা লেখা পাওয়া গেছিলো তাঁর বাড়ির ছাদ থেকে, তাঁর মৃত্যুর কিছুদিন পর। মনে আছে তোমার নামটা? স্কুল টেক্সট বুকে ছিল।‘

‘না।‘ সোজাসুজি উত্তর দেয় সাম্য। ‘অনেক রাত হোল। কাল ভোরে ল্যাবে যেতে হবে। গুড নাইট।‘  

সহসা জানালার বাইরে কৃষ্ণচূড়া গাছ আড়াল করে রেখেছে ল্যাম্পপোস্টের আলো। এবার পুজোয় বৃষ্টি হবে বোধ হয়। 

বিকেল পাঁচটায় পাবের ভিড় তেমন জমে ওঠেনি। ক্যামেলিয়া এই ভিড়টাকে ক্রাউড বলতে অভ্যস্ত। ভিড় মানে পুজোর আগে গড়িয়াহাটের ফুটপাথ, নিউ মার্কেট। ওরা দুজন কলেজে পড়াকালীন প্রায়েই যেত। জুহুরির চোখে বাছাই করে নিত কানের দুল।      

অর্ডারের সাথে এক্সট্রা মেয়নীজ চেয়ে ক্যামেলিয়া প্রশ্ন করে – ‘ড্রেসটা কেমন বললি না তো? ঠিক মত ক্যারি করতে পারছি? ওয়েসটার্ন ড্রেস না পরে পরে কনফিডেন্স লুজ্ করে ফেলেছি।‘

‘তুই কবে ঠিক এটা বুঝতে পারলি?’ পাল্টা প্রশ্ন করে মেঘাদ্রিতা।

‘কোনটা? কনফিডেন্স লুজ্ করার ব্যাপারটা?’ 

‘না। ইনটারেস্ট লুজ্ করার ব্যাপারটা।‘  

ক্যামেলিয়া বিয়ারের গ্লাসে লম্বা চুমুক দেয়। 

‘এত দিনের চেনা মানুষটা যখন পাশে শুয়ে অন্য কারো…’ ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকা বিদেশী লোকগীতিকে ছাপিয়ে যায় ক্যামেলিয়ার দীর্ঘশ্বাস।    

ক্যামেলিয়া আবার শুরু করে, - ‘আসলে এখন মানুষের কাছে এত বেশি অপশন…   

আর আমি একটা কথাও ভাবলাম। যদি আবার নতুন করে শুরু করার সুযোগ পাই, আমি সেখানে দেরি করতে চাই না।‘ মাথা নিচু করে গ্লাসের বুদবুদ গুলো মাপতে থাকে সে। 

পাবের ক্রাউড ধিরে ধিরে হাউসফুল। জায়েন্ট স্ক্রীনে পপ গায়ীকার সমুদ্র রঙের উজ্জ্বল চোখ, তিনি ধীর গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন একটা বাঘের দিকে। অডিও প্লেয়ারে তখন কান্ট্রি রোডস টেক মি হোম। মেঘাদ্রিতা ইতিমধ্যে জানে বুদ্ধিমতীরা জীবনে একধাপ এগিয়ে থাকে। আর তার বাবার মতে সে এখনো লড়াইতেই নামেনি।      


অসীম মালতিকে ছেড়ে পালিয়ে যায় ওদের বিয়ের ছ’মাস পর। মালতি তখন সন্তানসম্ভবা। যদিও পালিয়ে যাওয়া সেটাকে বলে না। ও গ্রামে ফিরে ফের বিয়ে করে। জয়লাল কাকু মেয়েকে তখন কতটা বুকে আঁকড়ে ধরেছিল, মেঘাদ্রিতা জানে না। মাত্র পাঁচটা তলার ফারাকে মালতির ডিপ্রেশনের খবর মেঘাদ্রিতা অবধি পৌঁছায়নি। তবু মালতি মা হয়।  এখন সে ব্যাঙ্গালোরের একটা সেন্টারে আয়ার কাজ করে। মালতি ওর দেশের বাড়িতে নিয়ম করে টাকা পাঠায়। বছরে দুবার ছেলেকে দেখতে যায় গ্রামে। এইবার পুজোতে দুজনে একসাথে কোলকাতায়।      

‘ছেলেটা স্কুল পাস করলেই ব্যাঙ্গালোরে নিয়ে যাব। তারপর ও ওখানেই কিছু…’  

মেঘাদ্রিতা পাব থেকে ফিরে লিফটের অপেক্ষায়। কথার মাঝপথে মালতিকে থামিয়ে প্রশ্ন করে, ‘তুই আর বিয়ে করবি না, মালতি?’ মালতি ঈষৎ হেসে মাথা নাড়ায়। মালতিদের সামর্থ্য নেই ডিপ্রেশন পোষার।    

সেদিন রাতে মেঘাদ্রিতা দূরভাষে ক্যামেলিয়াকে জিজ্ঞেস করে – ‘ইউ নেভার থট অফ কন্সিভিং?’  

‘পাগল নাকি! আমি তো আরো আটকে যেতাম!’ সুদৃঢ় কণ্ঠে উত্তর দেয় ক্যামেলিয়া।

মেঘাদ্রিতা ফোন রেখে চোখ বোজে। সেদিন রাতে সাম্যর হোয়াটসঅ্যাপ কলের উত্তর দেওয়া আর হয়না।  

আজ একটা স্নিগ্ধ মেঘলা সকাল মেঘাদ্রিতার ঘরে। ষষ্ঠীর সকাল। ছোটবেলায় এরকম দিনে বাবার হাত ধরে মেঘাদ্রিতা ঠাকুর দেখতে যেত। গুনে গুনে ঠাকুর দেখাতো বাবা। ল্যাপটপ খুলে মেঘাদ্রিতা রেসিগনেশন মেইল টাইপ করা শুরু করে। বাবা ঠিক বলে, লড়াইতে নামতে হবে। মেঘাদ্রিতার জানলার বাইরে তখন শুধুই কৃষ্ণচুড়া।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

Ad Code

Responsive Advertisement